নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রচুন্ড গরমে সবাই চাই একটু প্রশান্তি । তাই অবলিলায় তৃষ্ণা মেটাতে কেউ থমকে দাঁড়ায় ফুটপাতে আবার কেউ নামিদামি ফাস্টফুডের দোকানে । এমন মানুষ কমই আছে যারা পানীয় শরবত পছন্দ করেন না। দীর্ঘ ক্লান্তির দূর করতে শরীর কে সতেজতা আনতে পান করি এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত। সাধারণত রাস্তার ধারে বা ফুটপাতের শরবত বেশি পান করে থাকি । কিন্তু ফুটপাতের শরবত কতটুকু প্রশান্তি আনে, নাকি প্রশান্তির চেয়ে আমাদের শারীরিক ক্ষতিটা বেশী হচ্ছে আমরা কি কখনো তা ভেবে দেখেছি ,বা কি খাচ্ছি ? নিজেকে কখনো নিজেকে প্রশ্ন করেছি ?
তাই এবার আমাদের চোখ কুষ্টিয়ার ভাম্যমান শরবতের দোকানে । শহরের বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পাওয়া যায় আখ, লেবু, বেলসহ বিভিন্ন ধরনের শরবতের। এই সকল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অস্বাস্থ্যকর উপাদানে তৈরী এ শরবত খেয়ে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। রাস্তার ধুলাবালি আর অপরিচ্ছন্ন ভাবে তৈরি হচ্ছে মুখরোচক নানান বাহারীর নানান নামের শরবত। তাছাড়া শরবতে ব্যবহৃত পানি মানসম্মত নয় তা দেখলেই বুঝা যায় । ড্রামে সেতসেতি সৈবাল ও ছত্রাক । শরবতের সাথে যে বরফ ব্যবহার করা হচ্ছে তা ব্যবহার যোগ্য নয় কারন এই বরফ মাছ বা লাশ ব্যবহৃত সংরক্ষণের বরফ। ডিজেল দ্বারা চালিত মেশিনের কালো ধুয়া এগুলোকে আরো অস্বাস্থ্যকর করে তুলছে।
লেবুর শরবতে বিটলবন, চিনি ,মধু ও বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হচ্ছে যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। সাধারণত আখ যে পরিবেশে ছিলানো হয় তা খবুই অস্বাস্থ্যকর। তাছাড়া আখে বসা মশা, মাছি আনাগোনা আর রাস্তার ধুলা-বালি তো আছেই তার সাথে যানবাহনের কালো ধোঁয়া । এছাড়াও দেখা মিলে ভাম্যমান শরবতের দোকানে মাছি দূরীকরণে ব্যবহৃত করা হয় ক্ষতিকর কয়েল । এনিয়ে মানুষের নানা অভিযোগ থাকলেও হচ্ছে না তার কোন ব্যবস্থা ও সচেতনতা। যার ফলে প্রতিদিনই স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে অগুনিত মানুষ । কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর রেলগেট এলাকায় ভাম্যমান শরবত বিক্রেতা নাম না বলতে ইচ্ছুক তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন বরফ ফ্যাকটরি থেকে নিয়ে এসেছি । দেখা মেলে বরফ খন্ডিত একটি অপরিস্কার প্লাস্টিকের বস্তাই কার্টুনের মধ্যে রেখে দিয়েছে ।
এ সম্পর্কে কাদের নামে . এক পথচারী বলেন, আমরা রাস্তার পাশ থেকে যে সকল শরবত বা পানি পান করে থাকি তা খুবই অস্বাস্থ্যকর। তাছাড়া একই গ্লাস দিয়ে একাধিক মানুষ শরবত খাচ্ছে । যার ফলে বিভিন্ন রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও বর্তমানে করোনার প্রকপ নিয়েছে এমনিতেই সবাই ভয় ও আতঙ্কে আছে। তাই আমাদের সকলের উচিত এ বিষয়ে আরো সচেতন হওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞদের মতে রাস্তার পাশের বিক্রি করা শরবত নিরাপদ নয়। তাদের শরবতের পানি, বরফ কোথায় থেকে আসে তারও ঠিক নেই। এগুলো পানে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ হতে পারে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও ক্রিমি সৃষ্টি হতে পারে। আর লিভারের জটিলতা, পাকস্থলীতে প্রদাহ, খাদ্যনালিতে সমস্যা, আলসারসহ মারাত্মক জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও রাস্তার পাশের এসব পানি পান না করাই হচ্ছে মঙ্গলজনক। শরবত পান করে হেপাটাইটিস এ/বি ও পেটের অসুখ সহ নানা রোগ হতে পারে। তবে তীব্র গরমে প্রচুর বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে তা ঠিক। সে পানি হতে পারে লেবু শরবত। কিংবা উচ্চ রক্তচাপ না থাকলে খাবার স্যালাইন। কিন্তু এসব রাস্তার পাশে থাকা পানি পান করলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। আবার বরফ মিশ্রিত এসব শরবতে কিডনি বিকল ও ক্যান্সারের মতো মারাত্মক রোগ হতে পারে ।
Leave a Reply