কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় ছাত্রলীগের হামলা ও ভাংচুরের ফুটেজ নেয়ার সময় সাংবাদিককে মারধর ও ভাংচুরের মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক রেজাউল করীম এর আদালতে হাজির করলে আদালত শুনানী শেষে জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার মধ্যরাতে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের বাবুপাড়ার বাসিন্দা স্থানীয় পাইলট হাই স্কুলের শিক্ষক আবু তালেব রওশনের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগের এই নেতাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা(ডিবি) পুলিশের একটি টীম।
মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে সৌপর্দ করা হয় বলে নিশ্চিত করেন ওসি ডিবি আমিনুল ইসলাম।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুর করে দূর্বৃত্তরা। এঘটনায় প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠে জেলার নানা শ্রেনীপেশা ও রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা। একই ভাবে (৫ ডিসেম্বর) জেলা ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন কুষ্টিয়া শহর জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনকালে জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ এর নেতৃত্বে শহরজুড়ে হামলা ভাংচুরের তান্ডব চলে।এসময় শহরের মজমপুরে এক পরিবহণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাংচুরের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ছাত্রলীগের এই নেতার নেতৃত্বে দিপ্ত টিভির কুষ্টিয়া প্রতিনিধি দেবেশ চন্দ্র সরকার ও ক্যামেরা পার্সন হারুন অর রশিদের উপর হামলা করে ক্যামেরা ভাংচুর ও বেধড়ক মারপিট করলে রিপোর্টার দেবেশ ও ক্যামেরা পার্সন হারুন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এ ঘটনায় পরদিন (৬ ডিসেম্বর) দেবেশ চন্দ্র বাদি হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। এই সহিংস হামলার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানবন্ধন করে সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের এই বিতর্কিত নেতা সাদ আহমেদের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি ও রাতের আঁধারে কুষ্টিয়া শহরে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের অন্যের জমি দখলের অভিযোগ উঠায় সাংগঠনিক শৃংখলা ভঙ্গের কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক পত্রে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি বলেন, কেউ যদি ব্যক্তিগত ভাবে আইন বিরুদ্ধ অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তাহলে তার দায় সংগঠন নিবে না। তাছাড়া বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দেখছেন; উনারা যা করবেন সেটার বাইরে আমার যাওয়ার সুযোগ নেই।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশের(ডিবি) ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা সাদ আহমেদের বিরুদ্ধে হামলা ও ভাংচুরের অভিযোগের মডেল থানায় করা মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে আদলতে সৌপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
দেশতথ্য//এল//
Leave a Reply