কুষ্টিয়া প্রতিনিধি:
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দোকান ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমারখালী পৌর মেয়র তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রহিমের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ডাকবাংলোর সামনে ক্রয়কৃত জায়গার ওপর দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে সেই দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন।
কিন্তু দোকানের পেছনে উত্তর দিকে ডাকবাংলো নতুন ভবন নির্মান করা হয়। ডাকবাংলোর নব নির্মিত ভবনের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধির জন্য ডাকবাংলোর সামনে দিয়ে দৃষ্টি নন্দন আধুনিক একটি গেট নির্মানের পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী লালন শাহ পরিবহন কাউন্টারের জায়গার ওপর দিয়ে গেট নির্মানের কথা থাকলেও লালন শাহ পরিবহন কাউন্টারের জায়গা ইতিপুর্বে মূল মালিক বিক্রি করে দেয় এ বিষয়টি জানার পর অভিযুক্ত কুমারখালীর পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন ও মজিবর রহমান বাচ্চু ওই জমির ওয়ারেশ গনের কাছ থেকে পুনরায় ক্রয় করে লালন শাহ পরিবহনের মালিকের নিকট বিক্রি করে।
এর ফলে পৌর মেয়র শামসুজ্জামান অরুন লালন শাহ পরিবহনের কাউন্টার না ভেঙ্গে ভূক্তভোগী দোকানদারদের দোকান ভাঙ্গার পরিকল্পনা করে এবং পরবর্তীতে স্বেচ্ছায় দোকান ভাঙ্গার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয় এবং এই বলে হুমকি দেওয়া হয় যদি স্বেচ্ছায় দোকান ভাঙ্গা না হলে পৌরসভার বুলডোজার দিয়ে দোকান ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলো। হুমকির প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রহিম কুষ্টিয়ার কুমারখালী সহকারী জজ আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। যার মামলা নম্বর দেওয়ানী ২১৬/২০২০। উক্ত দেওয়ানী ২১৬/২০২০ নম্বর মামলায় মোঃ শামছুজ্জামান অরুন, মজিবর রহমান বাচ্চু ও আব্দুল গণির বিরুদ্ধে গত ৯নভেম্বর২০২০ তারিখে ৭ সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ ও স্থিতিবস্থার আদেশ দেন। উক্ত কারণ দর্শানো নোটিশ ও স্থিতিবস্থার আদেশের কপি গত ১০ নভেম্বর ২০২০ তারিখে আদালত কতৃক প্রেরিত নোটিশ অভিযুক্তদের নিকট পৌঁছালে ভুক্তভোগীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত মজিবর রহমান বাচ্চু, পিতা মৃত মসলেম উদ্দিন, গ্রাম দুর্গাপুর, মোঃ আব্দুল গণি, পিতা মৃত আমির উদ্দিন, গ্রাম দুর্গাপুর বাসস্ট্যান্ড কুমারখালী।
অভিযুক্ত শামছুজ্জামান অরুনের কথা মতো ১২ নভেম্বর ২০২০ তারিখ সকাল ৭টার দিকে অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন লোক উপস্থিত থেকে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পৌর মেয়র শামছুজ্জামান অরুনের নেতৃত্বে পৌরসভার বুলডোজার দিয়ে দোকান ভেঙ্গে দিয়ে যায়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, আমি দোকান নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে সেই দোকানে ব্যবসা পরিচালনা করে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। কিন্তু দোকানের পেছনে ডাকবাংলোর গেট নির্মানের জন্য লালন শাহ পরিবহন কাউন্টারের জায়গার ওপর দিয়ে গেট নির্মানের কথা থাকলেও লালন শাহ পরিবহন কাউন্টারের জায়গা না ভেঙ্গে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা শর্তেও আমাদের দোকান ভেঙ্গে দেয়।
দোকান ভাঙ্গার ফলে আয়ের উৎস হারিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি এর সুষ্ঠ প্রতিকার চাই। এ বিষয়ে কুমারখালী পৌর মেয়র মোঃ শামছুজ্জামান অরুন সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ওই জায়গার ওপর কোর্টের কোনো নির্দেশনা নেই এবং যারা জমির দাবি করছে তারা ডাকবাংলার গেট করার জন্য আগেই জায়গা দিয়ে দিয়েছে। এছাড়াও যারা এখন ওই জমির দাবি করছে তাদের কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। এর প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ থেকে নির্দেশ দেওয়ায় পৌরসভা থেকে ওই জায়গাটা ভেঙ্গে দিয়েছে।
দেশতথ্য//এল//
Leave a Reply